ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম বিভাগ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার সাইবার সংক্রান্ত/ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনস্থ অপরাধসমূহ সনাক্ত, অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ ও এই ধরণের অপরাধের মামলা/অভিযোগসমূহ তদন্ত করতঃ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
কেউ এহেন অপরাধের শিকার হলে নিন্মলিখিত ব্যবস্থা নিবেন:
১। ফেসবুক আইডি হলে লিংক সংরক্ষণ করতে হবে;
২। অপরাধমূলক স্ক্রীনশট রাখতে হবে;
৩। সম্ভব হলে অপরাধীর মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে;
৪। সোশ্যাল মিডিয়াতে চ্যাট করার সময় বাক্তিগত তথ্য ও ছবি দেয়া-নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে;
৫। ভিডিও কলের সময় পরিধেয় পোশাকের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে;
৬। বিকাশ বা ব্যাংক কার্ডের গোপন পিন কখনো কারো সাথে শেয়ার করবেন না;
৭। কোন প্রলোভনে পড়ে কারও সাথে ব্যাক্তিগত ও গোপনীয় ছবি ও তথ্য শেয়ার করা যাবে না;
৮। সোশ্যাল মিডিয়াতে কোন ফিসিং লিংকে প্রবেশ করা যাবে না;
৯। প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি বা পরিচিত কোন লোক ছাড়া অনলাইন হতে মালামাল বা দ্রব্য ক্রয় হতে যথাসম্ভব বিরত থাকা;
১০। কেউ এমন অপরাধের শিকার হলে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি বা মামলা করবেন এবং ঢাকা মহানগর এলাকায় হলে ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করে হেল্প নিতে পারেন। ঢাকার বাহিরে হলে সিআইডি’র সাইবার পুলিশ ইউনিট (০১৭৩০৩৩৬৪৩১) এর সাহায্য নিতে পারেন।
➤ কেউ সাইবার অপরাধের শিকার হলে কিভাবে মামলা করবেন?
১। আপনি বা যে কেউ সোশ্যাল মিডিয়াতে যদি অপরাধমূলক কিছু দেখে থাকেন তাহলে যে আইডি হতে দেখেছেন সেটার লিংক ও স্ক্রিনশট রেখে দেবেন।
২। যে আইডি হতে অপরাধ করা হচ্ছে সেই আইডি’র লিংক ও অপরাধের স্ক্রিনশট রেখে দেবেন।
৩। স্ক্রিনশট নেয়ার সময় লিংকসহ নিলে ভালো হয়।
৪। পোস্ট কোন সময় দেয়া হয়েছে আর আপনি কোন সময় এবং কোথায় থাকা অবস্থায় দেখেছেন বা অন্য কেউ দেখেছে সেটা নোট করে রাখবেন।
৫। অপরাধের ঘটনা অন্য কেউ দেখে থাকলে তার আইডি লিংক রাখবেন এবং কোন সময় আর কিভাবে দেখেছে সেটা জেনে রাখবেন এবং স্ক্রিনশট রেখে দিতে বলবেন।
৬। আপনার কোনো আত্মীয় বা বন্ধুর নিকট মেসেন্জারে কোনো মিথ্যা তথ্য বা আপনার খারাপ কোন ছবি পাঠালে সংরক্ষণ করে ও স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে বলবেন।
৭। ঘটনা অন্য কেউ দেখলে তিনিও মামলার সাক্ষী হতে পারেন।
৮। এইসব উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ নিয়ে আপনি যেখানে ঘটনা ঘটেছে বা যেখানে বসে দেখেছেন সেই থানায় মামলা করতে পারেন।
৯। মনে রাখবেন, আপনার স্বপক্ষে যত বেশি তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবেন, মামলায় আসামির সাজা পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে।
১০। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা আপনি থানায় না করতে পারলে আপনি বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইবুনাল, ঢাকায় করতে পারবেন সেক্ষেত্রে আপনাকে একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা নিতে হবে।
১১। তবে উপযুক্ত প্রমাণ ও ঘটনা সত্য মনে হলে থানার অফিসার ইন-চার্জ মামলা রেকর্ড করবেন।
কেউ কারো নাম বা ছবি ব্যবহার করে ফেক আইডি খুললে এই দুই ধারায় মামলা করতে পারেন।
➤ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ ধারা অনুযায়ী
(১) যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, কোনো ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সিস্টেম বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করিয়া-
(ক) প্রতারণা করিবার বা ঠকাইবার উদ্দেশ্যে অপর কোনো ব্যক্তির পরিচয় ধারণ করেন বা অন্য কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত কোনো তথ্য নিজের বলিয়া প্রদর্শন করেন, বা
(খ) উদ্দেশ্যমূলকভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে কোনো জীবিত বা মৃত ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তা নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে নিজের বলিয়া ধারণ করেন,-
(অ) নিজের বা অপর কোনো ব্যক্তির সুবিধা লাভ করা বা করাইয়া দেওয়া,
(আ) কোনো সম্পত্তি বা সম্পত্তির স্বার্থ প্রাপ্তি,
(ই) অপর কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিসত্তার রূপ ধারণ করিয়া কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিসত্তার ক্ষতিসাধন,
তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
(৩) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
➤ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী
(১) যদি কোনো ব্যক্তি আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে অপর কোনো ব্যক্তির পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, বিক্রয়, দখল, সরবরাহ বা ব্যবহার করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
(৩) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘পরিচিতি তথ্য’’ অর্থ কোনো বাহ্যিক, জৈবিক বা শারীরিক তথ্য বা অন্য কোনো তথ্য যাহা এককভাবে বা যৌথভাবে একজন ব্যক্তি বা সিস্টেমকে শনাক্ত করে, যাহার নাম, ছবি, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, মাতার নাম, পিতার নাম, স্বাক্ষর, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নম্বর, ফিংগার প্রিন্ট, পাসপোর্ট নম্বর, ব্যাংক হিসাব নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ই-টিআইএন নম্বর, ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল স্বাক্ষর, ব্যবহারকারীর নাম, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড নম্বর, ভয়েজ প্রিন্ট, রেটিনা ইমেজ, আইরেস ইমেজ, ডিএনএ প্রোফাইল, নিরাপত্তামূলক প্রশ্ন বা অন্য কোনো পরিচিতি যাহা প্রযুক্তির উৎকর্ষতার জন্য সহজলভ্য।
সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম বিভাগের হেল্প ডেস্ক-০১৭৬৯৬৯১৫২২
সবাই একটু সচেতন থাকুন আর সাইবার অপরাধ হতে নিজেকে মুক্ত রাখুন।